"আমরা নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করি না", কেন বলছে সুপ্রিম কোর্ট?

VVPAT Lok Sabha Election 2024: নির্বাচনে স্বচ্ছতার জন্য ইভিএমের 'সোর্স কোড'ও প্রকাশ করা উচিত, দাবি করেছেন নাগরিকরা

শুধু ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে জমা পড়া ভোট নয়, ভোটার ভেরিফায়েবল পেপার অডিট ট্রেল বা ভিভিপ্যাট ব্যবহার করে ভোট সম্পূর্ণ যাচাই করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টে এই নিয়ে একাধিক আবেদন জমা পড়েছিল। সেই সমস্ত আবেদনের শুনানি করতে গিয়ে দেশের শীর্ষ আদালত বলছে, "আমরা নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করি না, নির্বাচন সংস্থা সেই বিষয়ক সন্দেহ দূর করেছে"।

সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং দীপঙ্কর দত্তহাদের বেঞ্চ ইভিএমের কার্যকারিতা সংক্রান্ত পাঁচটি প্রশ্ন নিয়ে ভারতের নির্বাচন কমিশনের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে। বিচারপতিরা বলছেন, আদালত নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, আদালত অন্য সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষের কাজও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। আদালত বলছে, স্রেফ মানুষের সন্দেহের ভিত্তিতে কোনও আদেশ জারি করতে পারে না সুপ্রিম কোর্ট।

আবেদনকারীদের পক্ষের আইনজীবী বলছেন, নির্বাচনে স্বচ্ছতার জন্য ইভিএমের 'সোর্স কোড'ও প্রকাশ করা উচিত। এর জবাবে বিচারপতি সঞ্জীব খান্না বলেছেন, সোর্স কোড কখনই প্রকাশ করা উচিত নয়। প্রকাশ করা হলে তার অপব্যবহার হবে। সঞ্জীব খান্নার কথায়, "আমরা তিন-চারটে বিষয়ে স্পষ্ট উত্তর চেয়েছিলাম। একটি হচ্ছে, মাইক্রোকন্ট্রোলারটি কন্ট্রোলিং ইউনিটে বসানো আছে নাকি VVPAT-এ ইনস্টল করা আছে? ধারণা করা হচ্ছিল, মাইক্রোকন্ট্রোলারটি কন্ট্রোল ইউনিটে রয়েছে। আমাদের বলা হয়েছিল যে VVPAT-এর ফ্ল্যাশ মেমোরি রয়েছে।"

আরও পড়ুন- ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট মেলালেই ভোটারদের ভোট সঠিক জায়গায় যাবে?

"দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, মাইক্রোকন্ট্রোলার কি একবারই প্রোগ্রামযোগ্য? এটা নিশ্চিত করতে হবে। তৃতীয়ত, সিম্বল লোডিং ইউনিটগুলি উল্লেখ করতে হবে। কতগুলি ইউনিট উপলব্ধ? চতুর্থ বিষয়টি হচ্ছে, বলা হয়েছিল নির্বাচনী পিটিশনের সময়কাল ৩০ দিন এবং তাই ৪৫ দিনের জন্য তথ্য সংরক্ষণ করা হয়েছিল। এই সঞ্চয়ের সময়কাল বৃদ্ধি করতে হবে। পাশাপাশি, কেবল কন্ট্রোল ইউনিটটি সিল করা হয়েছে নাকি ভিভিপ্যাটও আলাদাভাবে রাখা হয়েছে তাও স্পষ্ট জানাতে হবে," বলছেন বিচারপতি।

বর্তমানে, একটি সংসদীয় কেন্দ্রের প্রতিটি বিধানসভা বিভাগে শুধুমাত্র পাঁচটি যে কোনও নির্বাচিত ইভিএমে VVPAT যাচাই করা হয়। এই মাসের শুরুতে, শুধুমাত্র পাঁচটি যে কোনও নির্বাচিত ইভিএম যাচাই করার পরিবর্তে, নির্বাচনে সমস্ত VVPAT পেপার স্লিপ গোনার জন্য জমা পড়া পিটিশনের জবাবে সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচন কমিশনকে একটি নোটিশ জারি করেছিল।

নির্বাচন কমিশন নির্দেশিকায় বলেছিল ভিভিপ্যাট যাচাই করতে হবে ক্রমানুসারে, যার ফলে অযথা বিলম্ব হবে। পিটিশনে দাবি করা হয়েছে, একযোগে যদি যাচাই করা হয় এবং প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে গণনার জন্য অতিরিক্ত সংখ্যক কর্মী মোতায়েন করা হয়, তাহলে মাত্র পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টার মধ্যে সম্পূর্ণ VVPAT যাচাই হয়ে যেতে পারে। কিন্তু লির্বাচন কমিশন বারেবারে জোর দিয়ে বলেছে, কোনও পরিস্থিতিতেই ইভিএম কারচুপি করা যাবে না এবং সমস্ত ভিভিপ্যাট স্লিপও গোনা কার্যত সম্ভবপর নয়।

নির্বাচনের আগে সমস্ত ইভিএমেরই মক ড্রিল হয় এবং প্রার্থীদের যেকোনও ৫ শতাংশ মেশিন বেছে নিতে দেওয়া হয়। কমিশন বলছে, এই প্রক্রিয়াটি ভোটের দিন আবারও করা হয়।

More Articles